অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : চীন বিশ্বজুড়ে গোপনে অবৈধ পুলিশ স্টেশন বসাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ইউরোপের দেশগুলোতে চীন ৫০ টিরও বেশি অবৈধ পুলিশ স্টেশন স্থাপন করেছে বলে জানা গেছে। যেগুলোর অস্তিত্ব সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়নি। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এগুলোর মধ্যে নেদারল্যান্ডসের রটেরডাম ও আমস্টারডামে বসানো হয়েছে দুইটি পুলিশ স্টেশন। ডাচ গণমাধ্যমের প্রমাণ অনুযায়ী, এসব স্টেশন কূটনৈতিক সেবা দেওয়ার কথা বলে আসলেও তারা ইউরোপে চীন ভিন্নমতাবলম্বীদের মুখ বন্ধ করা এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কাজ করে যাচ্ছে।
ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, এসব পুলিশ ফাঁড়ি অবৈধ। কারণ, এগুলো বসানোর ব্যাপারে ডাচ সরকারকে কখনও কিছু জানানো হয়নি। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডাচ সরকারের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
স্পেনভিত্তিক এনজিও সেফগার্ড ডিফেন্ডারসের ‘চায়নিজ ট্রান্সন্যাশনাল পোলিশিং গান ওয়াইল্ড’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে চীনের এই অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিষয়টি উঠে আসার পর তদন্ত শুরু হয়। সেই তদন্তেই নেদারল্যান্ডসে চীনের এমন পুলিশ স্টেশনের সন্ধান পাওয়া যায়।
এনজিও সেফগার্ড ডিফেন্ডারস তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চীনের দুইটি প্রদেশের জননিরাপত্তা ব্যুরো ৫ টি মহাদেশজুড়ে এবং ২১ টি দেশে ৫৪ টি বৈদেশিক পুলিশ সেবা কেন্দ্র খুলেছে।
এগুলোর বেশিভাগই খোলা হয়েছে ইউরোপের দেশগুলোতে। এর মধ্যে স্পেনে ৯ টি, ইতালিতে ৪টি ও যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ২ টি ও গ্লাসগোতে ১ টি স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে। এই পুলিশ ইউনিটগুলো দৃশ্যত আন্তর্জাতিক অপরাধ সামাল দেওয়া এবং চীনের চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার মতো প্রশাসনিক কিছু কাজের জন্য চালু করা হয়েছিল।
কিন্তু সেফগার্ড ডিফেন্ডারস জানিয়েছে, বাস্তবে এসব পুলিশ ইউনিট দমন অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ করে চীনের শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলছে এমন কাউকে সন্দেহ হলে তাকে দেশে ফিরতে জোর করা হচ্ছে।
নেদারল্যান্ডসের অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম আরটিএল নিউজ এক চীনা ভিন্নমতাবলম্বীর কাহিনী তুলে ধরেছে। ওয়াং নামের ওই চীনা ডাচ সাংবাদিকদের জানান, নেদারল্যান্ডসে চীনের পুলিশ তার পিছু নিয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রশাসনের সমালোচনা করায় তিন বছর ধরে চীনা পুলিশ তাকে খুঁজছে।
তবে এ ঘটনার বিষয়ে চীনের দূতাবাসের বরাত দিয়ে আরটিএল নিউজ জানায়, তারা এমন কোনও চীন পুলিশ স্টেশন থাকার ব্যাপারে কিছু জানে না।
ডাচ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিবিসিকে জানান, এ ধরনের অভিযানের ব্যাপারে চীন সরকারের কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে ডাচ সরকারকে কিছু জানানো হয়নি। এটি অবৈধ।
Leave a Reply